23-06-22 (02:24)
- এই যে হনুমান।
এইবার আমি দাড়িয়ে গেলাম। বলে কি
মেয়েটা? আমি নাকি হনুমান?
- এই ছেমড়ি আমি হনুমান?
- আসতে আসতে (পাশে দাড়ানো মেয়েটা)
- রাখেন আসতে আসতে...যত্তসব
পেত্নীদের দল।
কথাটি বলে চলে আসতে যাবো..ঠিক তখনি
অদ্রিতা প্যান্টের পকেট থেকে একটা চাকু
বের করলো...
হায়রে এটা কি? বললো..
- এটা কি দেখেছো?
- আপেল কাটবেন বুঝি (আমি)
- ঐ চুপ...তোর নাম্বার দে
- আমি তো সিম দিয়ে কথা বলি না,,
- মানে?
- মানে আমি মেমোরি দিয়ে কথা বলি।
জামার কলার ধরে অদ্রিতা বললো...
- ঐ নাম্বার দিতে বলেছি দে,,,না হলে
এখনি পেটে চালান করে দেবো..
অগত্যা নাম্বার দিতে হল..নাম্বার দেয়ার
পর বললাম...
- আপনি সত্যিই মেয়ে তো?
- মানে?
- কদিন পর আপনারে আমি একটা লুঙ্গী
গিফট দিমু।
কথাটি বলেই সোজা হেটে চলে আসলাম।
আর ঠিক তখনি মনে পড়লো,,ভয়ে ভুলে
বন্ধ সিমের একখান নাম্বার দিয়ে এসেছি।
যাক গে সে সব,,আমারই ভালো হলো..
আজো আসার সময় মেয়েটাকে দেখিনি।
তবে আজ লক্ষ্য করেছি, পড়ানোর সময়
কেউ একজন আমাকে পর্দার আড়ালে
দেখে।
এটা যে কে জানা দরকার। তবে ছাত্রের
কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইতে কেমন
লাগছে।
বাসায় চলে আসলাম। এসে খেয়ে দেয়ে,
ক্ল্যাশ অফ ক্ল্যান খেলে ঘুমিয়ে
পড়লাম।
(পরেরদিন)
- এই হারামি? (অদ্রিতা)
আজও গলি দিয়ে হেটে যাচ্ছিলাম।
- আমি কি??
- তোর ফোন দে
- এ্যাঁ...ছিনতাই করবেন?
- হুটটট,,ফোন দে..
দিলাম আর কি করার...একটু পরেই দিয়ে
দিলো...
- এই নে,,এই দেখ আমার নাম্বার সেভ করে
কল দিছি। রাতে ফোন দিমু। যদি না কথা
বলিস,, তোর কপালে দুঃখ আছে বলে
দিলাম।
- যত্তসব শ্যাওড়া গাছের ভুত।
কথাটি বলেই চলে আসলাম সেখান থেকে।
দুরে যেয়ে ফিরে তাকালাম। তখনি দেখলাম
সবাই হা করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
হয়ত ভাবছে পেত্নী বাদে ভূত কেনো
বললাম।
কারন, যে হারে ওরা ছেলেদের প্যান্ট আর
শার্ট পরছে,,না জানি কবে আমাদের জন্য
ঐগুলো কম পড়ে যায়। শেষমেশ আমাদের
শাড়ী পরে বের হতে হয়কি...
পড়াচ্ছি ছাত্রকে...আজো দেখলাম
জানালার পর্দায় কেউ একজন বসে আছে।
আর আমাকে দেখছে।
কাহিনি কি?
- আচ্ছা রফি,,তোমাদের বাসায় কে কে
থাকে?
- কোনো ভাইয়া?
- নাহ কিছু না..
পড়ানো শেষে চলে আসলাম বাড়িতে।
ধুরর কে ঐ উনি? দেখে তো বোঝা যায়
একটা মেয়ের শেফ। কিন্তু কে ও?
আমাকে কেনো দেখে...
ফোনের টিউনে বাস্তবে ফিরলাম। নামটি
দেখে চমকে গেলাম। ""অদ্রিতা""
সেই বখাটে মেয়েটি।
- হ্যালো..
- ঐ ফোন ধরতে এত সময় লাগলো
কেনো?
- কেনো দিছেন ফোন?
- বিয়ে করবা আমাকে? তোমাকে আমি
ভালোবাসি।
- হাহাহাহা
- হাসির কি হল...
- কিছু না,,
কেটে দিলাম ফোন..
এভাবেই কেটে গেল ১ মাস,,রোজ অদ্রিতা
রাস্তায় আর ফোনে জ্বালাতোন
করতো। এখন একটাই কথা সে আমাকে
ভালোবাসো।
কিন্তু কেনো? আজ জানতে হবে। আমাকে
কেনো ভালোবাসে?
- এই যে বাবু (অদ্রিতা)
আজও পড়াতে যাচ্ছি তখনি ডাক দিলো
- কী?
- চলোনা প্রেম করি..
- আচ্ছা একটা কথা বলেন তো..আমাকে
কেনো আপনার ভালোবাসতে হবে?
- কারন,,তুমি অন্য ছেলেদের মত নও।
আলাদা খুব। কেউ আমার সাতে কথা বলেনা
ভয়ে। আর তুমি রীতিমত ঝগড়া করো
আমার সাথে। তাই তোমাকে ভালোবাসি।
- হাহাহাহা..
- হাসলা কেনো?
- আমি বাসি না।
- কেনো?
- এমনি।
- আমি কি দেখতে খুব খারাপ?
- নাহ,,তবে তুমি ছেলেদের মত।
- মানে?
- মানে তুমি যদি শার্ট প্যান্ট বাদে একটা
বাঙালি মেয়ের মত শাড়ি পরতা তাহলে
ঠিক ছিলো..কিন্তু...যাও যাও লুঙ্গী পরে
আসো।
কথাটি বলেই চলে আসলাম। আজও ফিরে
তাকালাম। কিন্তু আজ আর কেউ হা করে
তাকিয়ে ছিলো না।
দেখলাম অদ্রিতা মাথা নিচু করে দাড়িয়ে
আছে।
পড়াতে আসলাম। সেখানে আজো ঐ
মেয়েটাকে দেখলাম। তবে আসার সাথে
সাথে দেখিনা। চলে যাওয়ার ১০ মিনিট
আগেই মেয়েটিকে দেখি। কিন্তু এ অবদি
আমি ওকে দেখিনি সে কেমন...
।।
রুমে শুয়ে গেমস খেলছি,,তখনি আম্মু
আসলো..
- বাবা তোর জন্য একটা সুখবর আছে।
- কি।
- তোর চাকরি হয়েছে। এই দেখ তোর
এপোয়েটমেন্ট লেটার।
(কদিন আগে একটা ইন্টারভিউ দিছিলাম,
আর আজ সেটার রেজাল্ট পেলাম)
- ঠিক আছে রেখে যাও
.
আজ কয়েকদিন হল মেয়েটাকে দেখি না। না
রাস্তায় দেখি। না সে আমাকে জ্বালায়।
আর মজার ব্যাপার হল, রফিদের বাড়িতে
সেও মেয়েটাকেও আর দেখছি না।
এটা কি হল...
আজ পড়াতে যাওয়ার শেষ দিন,কারন আমি
কাল থেকে অফিসে যাবো। তাই বলতে
আসলাম এদের..
সোফাতে বষে আসলাম। তখনি দেখলাম
পর্দার আড়াল থেকে মেয়েটি আমাকে
দেখছে।
- হ্যা বাবা কিছু বলবে? (আনটি)
- আসলে আমি আর পড়াবো না। আমার
চাকরি হয়ে গেছে তো।
- ওহ,,আচ্ছা তুমি বসো,আমি তোমার
টাকাটা নিয়ে আসছি
আনটি চলে গেলেন, টাকাও নিয়ে
এলেন...টাকাটা নিয়ে চলে আসলাম বাইরে।
তখনি পিছন থেকে কেউ একজন ডাক
দিলো। কন্ঠটা চেনা চেনা লাগছে।
তাকিয়ে দেখি মাথায় ইয়া লম্বা ঘোমটা,,
শাড়ি পরা,,
- জ্বি
- আর আসবেন না?
- আপনি না সেই পর্দার আড়ালের মেয়ে?
কথাটি শেষ করতেই মেয়েটি তার ঘোমটা
সরালো..
আর আমি তাকিয়ে দেখি এটা অদ্রিতা..
খুব অবাক হয়েছি আমি
- তুমি???
- হ্যা আমি।
- কিন্তু কিভাবে?
- এটাই আমাদের বাসা..
- তা বলোনি কেনো?
- এমনি আর প্রথমদিন ঝগড়া করে আসার
পর তোমার পিছুনি,,তখনি দেখি তুমি
আমার ভাইকেই পড়াতে আসো।
- আর এরপর থেকেই তুমি আমাকে রাস্তায়
হুমকি দিতে,,আর বাড়িতে এসে লুকিয়ে
দেখতে। কি ফাজিল মেয়ে রে বাবা।
- ঐ চুপ,,আমি অদ্রিতা,,শাড়ি পরেছি বলে
কি ক্যারেক্টার পাল্টাই নাই।
- ও মা তাই তো, ভালে গেছিলাম লুঙ্গী
সুন্দরী।
- এইই কি বললে? আচ্ছা শোনো
না...আমাকে এবার ভালোবাসবে তো...
- নাহ
কথাটি বলেই চলে আসছিলাম। একটু দুরে
যেতেই পিছনে তাকিয়ে বললাম।
- সবসময় শাড়ি পরে থাকলে খালি
ভালোবাসবো না, বিয়ে করে বউও
বানাবো..
দেখলাম অদ্রিতা মিষ্টি হেসে তাকিয়ে
আছে।
আর আমি পকেটে হাত গুজে গান গাইতে
গাইতে বাসায় আসলাম।
চাকরিটা কদিন করে নেই,,তারপর বিয়ে।
এখন যাই ফোনে কথা বলতে হবে তো..
"(সমাপ্ত)"